কালী শব্দের অর্থ
কালী শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে কাল+ঈ ৷ কাল মানে সময় ৷ এর আদি নেই,অন্ত নেই ৷ শিবকে মহাকাল বলা হয় ৷ তিনি নির্গুণ ব্রক্ষ্ম ৷ ওই অনন্ত কালকে উপলব্ধির জন্যে একটা জীবন্ত শক্তি দরকার ৷ সেই জীবন্ত শক্তি হচ্ছে ঈশা, যার কথা ঈশোপনিষদে আছে —"ঈশাবাস্যবিদং সর্বং" ৷ কালের সঙ্গে 'ঈ' শক্তি যুক্ত হয়ে কালী হয়েছে ৷ 'ঈ' হচ্ছে ঈশ্বরী,সগুণ ব্রক্ষ্ম ৷ পূর্ণরূপ যে কাল, তার অংশবিশেষ শুধু কালী ৷ কাজেই কালী হচ্ছেন কালকে উপলব্ধি করার প্রাণশক্তি ৷
চিত্র : নিজস্ব
যিনি কলন করেন তাঁকেই কালী বলা হয় ৷ শিব জীবের মধ্যে অবস্থান করলেও নিশ্চল নির্মল নির্গুণ অবস্থায় আছেন ৷ কিন্তু সেখানেই কলন করে তিনি স-কল হয়ে উঠেছেন ৷ এই নিষ্কলের স-কল মূর্তি হল কালীমূর্তি ৷ আমরা বিশ্বে অনন্ত মূর্তি দর্শন করছি ৷ সবাই এই নিষ্কলের স-কল মূর্তি ৷ সব জায়গায় কলন করে তিনি কালী হয়েছেন ৷ তার মানে, তিনি নিজে জীবীভূতা হয়েছেন ৷ বিরাট চৈতন্যমূর্তি থেকে ভাবরজ্ঞনের খণ্ড খণ্ড কলা ধরে বিশ্বের প্রতি জীবের ভেতরে কালীমূর্তি সেজে বসেছেন ৷
সংসারস্থিত মহাকালস্বরূপ পরমাত্মা দ্বিদলপদ্মে নেমে এসে জীবীভূতা প্রাণময়ী কালী হয়েছেন ৷ আমরা যদি ওখানেই থাকতে পারি,তবে সব অবস্থায় তাঁকে উপলব্ধি করতে পারবো ৷ কিন্তু ওই দ্বিদলপদ্ম থেকে যখনই আমাদের নিচে নামিয়ে পঞ্চভূতের ফাঁদে ফেলে দিলেন, আমরা মা-কে ভুলে মায়ায় বিজড়িত হয়ে গেলাম ৷
—পরমহংস হরিহরানন্দ ৷